সৌরজগত!! এক রহস্যের নাম। এত বিশাল এর বিস্তৃতি যার খুব কিয়দংশই মানুষ আজ পর্যন্ত জানতে পেরেছে।আমরা যে সৌরজগতে আছি সেই সৌরজগত যে ছায়াপথ বা গ্যালাক্সি তে অবস্থিত সেটাকে বলে আকাশগঙ্গা বা মিল্কিওয়ে। এই সৌরজগতের যে গ্রহ নিয়ে সবচেয়ে বেশি জানা গেছে বলে ধারণা করা হয় সেটি হল পৃথিবী। কারণটা হলো আমরা এখানে বাস করি এবং এ গ্রহের উপর গবেষণা করা আমাদের জন্য সহজ। নিছে পৃথিবী সম্পূর্কে অনেকের জানা-অজানা কিছু তথ্য তুলে ধরা হলো আশা করি ভালো লাগবে।
পৃথিবীর ইংরেজি শব্দ আমরা জানি Earth কিন্তু মজার ব্যপার হলো- Earth শব্দটি এসেছে ইংরেজি শব্দ “Eorthe” এবং জার্মান শব্দ “Erda” থেকে। যার অর্থ ভূমি বা মাটি।আনুমানিক ৪.৫৪ বিলিয়ন বছর আগে গঠিত হওয়া একমাত্র গ্রহ যেটাতে জানামতে প্রাণের বিকাশ হয়েছে। পৃথিবীর ভর প্রায় ৬÷১০^-২৪ কেজি(৬ এর পরে ২৪টি শূন্য)। পৃথিবীর গড় ঘনত্ব হিসেব করলে এর মান প্রায় ৫.৫২ গ্রাম/কিউবিক সেন্টিমিটার।
পৃথিবীর ঘূর্ণন আস্তে আস্তে ধীরগতির হচ্ছে। খুব কম মাত্রায় বলে এটা আপাতভাবে বোঝা যায়না । প্রতি ১০০ বছরে প্রায় ১৭ মিলিসেকেন্ড করে। যেমন ১৪০ মিলিয়ন বছর পরে পৃথিবীতে একদিন এর গড় দৈর্ঘ্য ২৪ ঘন্টা থেকে ২৫ ঘন্টা হবে।
আমরা কি জানি পৃথিবীর অভ্যন্তরীণ তাপমাত্রা কত!? এ তাপমাত্রা আমাদের কল্পনার বাইরে। পৃথিবীর অভ্যন্তরে কেন্দ্রের তাপমাত্রা অনেক বেশি ।এই তাপমাত্রা এতই বেশি যে তা প্রায় সূর্যপৃষ্ঠের তাপমাত্রার সমান। এর মান প্রায় ৫৪০০ ডিগ্রী সেলসিয়াস।

আমদের সহ্য করা সর্বোচ্চ তাপমাত্রা কত হবে!? আমার মতে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা হবে ৩৭ ডিগ্রি আর সসর্বনিম্ন তাপমাত্রা হবে ৫ ডিগ্রী। তবে কেউ যদি এর বাইরে থাকেন জানিয়ে দিয়েন। নিঃসন্দেহে এন্টার্কটিকা পৃথিবীর সবচেয়ে শীতল স্থান। শীতে এই তাপমাত্রা কমে -১০০ ডিগ্রী ফারেনহাইট(-৭৩ ডিগ্রী সেলসিয়াস) এর ও নিচে নেমে যায়। কিন্তু চমকপ্রদ তথ্য হল এ পর্যন্ত পৃথিবীর সবচেয়ে নিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে রাশিয়া তে। ১৯৮৩ সালের ২১শে জুলাই রাশিয়ার ভস্টক স্টেশানে(Vostok Station) রেকর্ডকৃত তাপমাত্রা ছিল -৮৯.২ ডিগ্রী সেলসিয়াস যা এখন পর্যন্ত পাওয়া পৃথিবীর সর্বনিম্ন তাপমাত্রা।আর সর্বোচ্চ তাপমাত্রা পাওয়া গিয়েছিল লিবিয়ার আল আজিজিয়া তে । ১৯২২ সালে রেকর্ডকৃত সেই তাপমাত্রা ছিল প্রায় ১৩৬ ডিগ্রী ফারেনহাইট । ভাবতেই গায়ের চামড়া পুড়ে যায়।


গরম-ঠান্ডায় যখন এসে পড়েছি এবার আরেকটক আশ্চর্যের বার্তা দেওয়া যাক। পৃথিবীর সবচেয়ে শুষ্ক স্থান বলা হয় চিলি এবং পেরুতে অবস্থিত আটাকামা মরুভূমি (Atacama Dessert) কে। এই মরুভূমির কেন্দ্রে এমন কিছু জায়গা আছে যেখানে কখনো বৃষ্টি হয়েছে বলে জানা যায়নি।

গরমের সাথে আগুনের একটা সম্পর্ক আছে। আমরা কি জানি পৃথিবীর সবচেয়ে বড় আগ্নেয়গিরি কোনটি এবং কোথায় অবস্থিত!?দক্ষিণ ইটালির স্ট্রম্বলি (Stromboli) আগ্নেয়গিরি কে পৃথিবীর সবচেয়ে সক্রিয় আগ্নেয়গিরি বলা হয়। গত প্রায় ২০০০ বছর ধরে এটি ধারাবাহিকভাবে ক্রমাগত অগ্ন্যুতপাত ঘটিয়ে যাচ্ছে। 
আমদের অনেককে যদি প্রশ্ন করা হয় পৃথিবীর সবচেয়ে গভীর স্থান কোনটি!? আমরা অনেকই সংকোচ ছাড়া বলে দিব সমুদ্রের তলদেশের কোন স্থানের কথা। কিন্তু পৃথিবীর গভীরতম স্থান কোনো সমুদ্রের তলদেশ নয় বরং এটি একটি স্থলভাগ। পৃথিবীর সবচেয়ে গভীরতম স্থানের গভীরতা ৩৫৮১৩ ফুট(১০৯১৬ মিটার) যেখানে সবচেয়ে গভীর সমুদ্রের গভীরতা ৮৩৮২ ফুট(২৫৫৫ মিটার)। আর সেই গভীরতম জায়গাটি হল এন্টার্কটিকার বেন্টলে সাবগ্ল্যাসিয়াল ট্রেঞ্চ (Bentley Subglacial Trench) যেটি বরফ ঢাকা।

সমুদ্রের কথা যেহেতই এসেই গেছে এবার আসা যাক সমুদ্রে পৃথিবীর প্রায় ৭০ ভাগ ই সমুদ্র দিয়ে ঢাকা। আশ্চর্য হলেও সত্য, মানুষ যার ৫ ভাগ সম্পর্কে মাত্র জানতে পেরেছে ।এই বিশাল সমুদ্রভাগের ৯৫ ভাগই এখন পর্যন্ত অজানা।পৃথিবীতে যে পরিমান পানি আছে তার মাত্র ০.০০০৩% পানি মানুষ আজ পর্যন্ত ব্যবহার করতে পেরেছে।
#Source:_Internet