ভ্যাক্সিন তৈরিতে এত দীর্ঘ সময় কেন লাগে সেটা আমাকেও প্রায় সময় শুনতে হয় । আমরা এর চট জলদি জবাবও দিতে পারিনা । এটা একটু জটিল ও একাধিক ধাপ যুক্ত প্রক্রিয়া । প্রতিটা ধাপের সাফল্যের পর পরবর্তী টা শুরু হয় । এখানে আগে থেকে কিছু প্রস্তুত করে রাখাও সম্ভব নয় ।
আমি সংক্ষেপে ধাপগুলো আলোচনা করি ।

1, Exploratory: অনুসন্ধান মূলক গবেষণা কাল বলা যায় ।ভ্যাক্সিন তৈরির পরিকল্পনা হয় ।কোন দুর্বলকৃত ভাইরাস কে এন্টিজেন হিসেবে নির্বাচন করা হয় যেটা ঐ ভাইরাস কর্তৃক সৃস্টি রোগকে প্রতিরোধ করতে পারবে ।
2, Pre-clinical: গবেষক প্রতিষ্ঠান কোন জৈব টিস্যু ,সেল বা প্রাণীর শরীরে এন্টিজেন প্রয়োগ করে ।
যদি প্রাণীটির কোন ক্ষতি হয় বা কোন এন্টিবডি তৈরি না হয় ,তবে গবেষণা এখানেই শেষ । অনেক কোম্পানি এতটুকু এসে আর এগোতে পারেনি ।
3, Clinical development: এটার জন্য গবেষকদের একজন স্পন্সর লাগে , স্পন্সর উক্ত ভ্যাক্সিন এর ক্লিনিকেল টেস্ট এর জন্য ওই দেশের ঔষধ প্রশাসন কর্তৃপক্ষ কে অনুরোধ জানায় ।
ঔষধ প্রশাসন রিভিউ বোর্ড গঠন করে তাদের ভ্যাক্সিন এর গ্রহণযোগ্যতা দেখে । যুক্তি গ্রাহ্য হলে আবেদন মঞ্জুর করে । অতঃপর তিনটি পর্যায়ে ক্লিনিকেল টেস্টিং করে ।
প্রথম, ধাপ, প্রথমে অল্প সংখ্যক স্বেচ্ছাসেবককে ট্রায়াল দেয় ।
দ্বিতীয় ধাপ, তাদের কাছ থেকে এর কার্যকারিতা দেখে এন্টিবডি মাত্রা ,ডোজ, নির্ধারণ করে ।
তৃতীয় ধাপ, অতঃপর বৃহৎ সংখ্যক স্বেচ্ছাসেবক কে ট্রায়াল দেয়া হয় । তারপর এর কার্যকারিতা পুনর্মূল্যায়ন করা হয় ।
চতুর্থ ধাপ, Regulatory review and approval: তিন টি ক্লিনিকেল স্টেজ পার হবার পর ভ্যাক্সিন উদ্যোক্তা নিরাপদ বায়োলজি সনদের জন্য ঔষধ প্রশাসনে আবেদন করেন ।
পঞ্চম ধাপ, Manufacturing: ঔষধ প্রস্তুত কারক কোন কোম্পানির সাথে ভ্যাক্সিন উৎপাদন এর জন্য চুক্তিবদ্ধ হয়। কোম্পানী সমূহ নিজেরা লাভবান হবার বিনিময়ে আলাদা ভৌত কাঠামো ,কর্মী ও যন্ত্রপাতি নিয়োগ দেয়।অতঃপর বড় ও ব্যাপক ভ্যাক্সিন উৎপাদন শুরু হয় ।
ষষ্ঠ ধাপ, Quality control: অংশীদাররা ভ্যাক্সিন এর সত্যিকার কার্যকারিতা ও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া মনিটর করে । প্রয়োজনে তারা ফ্রি কিছু স্যাম্পল বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান এ সরবরাহ করে সেটার ফলাফল প্রত্যক্ষ করেন । এটাকে চতুর্থ ফেজ ট্রায়াল বলা হয় ।
এটার মাধ্যমে Vaccine Adverse Event Reporting System (VAERS) এবং Vaccine Safety Datalink তৈরি হয় ।
পুরো প্রক্রিয়া সফল হতে একদল দক্ষ গবেষক ,নীতিনির্ধারক ,অংশীদার ও স্বাস্থ্যকর্মী প্রয়োজন । এটার জন্য সাধারণত বার থেকে আঠারো মাস সময় লেগে যায় ।
সূত্র: সিডিসি ,